8 Nov 2017

করাপ্ট পেনড্রাইভ


পেনড্রাইভ ব্যবহার করেন অথচ তা কখনো করাপ্ট হয়নি, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

Photo Credit : Pixabay
আমরা অনেকেই পেনড্রাইভে প্রয়োজনীয় ফাইল স্টোর করে রাখি। কেউ কেউ পেনড্রাইভকে কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের ব্যাক আপ স্টোরেজ হিসাবেও ব্যবহার করেন। তাই পেনড্রাইভ যখন করাপ্ট হয়ে যায়, যখন পেনড্রাইভ থেকে ফাইল অ্যাকসেস করা যায় না, তখন আমাদের সত্যিই সমস্যায় পড়তে হয়। তবে বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে, যার সাহায্যে আপনি করাপ্ট পেনড্রাইভ থেকে ফাইল অ্যাকসেস করতে পারবেন।


⇒ ড্রাইভ লেটার পরিবর্তন 

অনেক ক্ষেত্রে পেনড্রাইভের ‘ড্রাইভ লেটার’ পরিবর্তন করলে সমস্যা মিটে যায়। পেনড্রাইভের নির্দিষ্ট ড্রাইভ লেটার থাকে। ধরা যাক আপনার কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভটির তিনটি পার্টিশন রয়েছে, সেগুলি হল ‘C’, ‘D’ এবং ‘E’। পেনড্রাইভটিকে কম্পিউটারের ইউএসবি পোর্টে ইনসার্ট করার পর ‘মাই কম্পিউটার’ বা ‘কম্পিউটার’ আইকন ক্লিক করে দেখুন পেনড্রাইভের আইকনের পাশে কোন লেটারটি শো করছে। ধরা যাক আইকনের পাশে শো করছে ‘J’ লেটার। তাহলে আপনার পেন ড্রাইভের ‘ড্রাইভ লেটার’ হল ‘J’। এবার ধরা যাক আপনার পেনড্রাইভটি করাপ্ট হয়ে গিয়েছে, কম্পিউটারের পোর্টে ইনসার্ট করার পরেও কম্পিউটার পেনড্রাইভটিকে ‘রিকগনাইজ’ করতে পারছে না। পেনড্রাইভটি কম্পিউটারের পোর্টে ইনসার্ট করা অবস্থায় ডেস্কটপের ‘মাই কম্পিউটার’ বা ‘কম্পিউটার’ আইকনের উপর রাইট ক্লিক করুন। যে মেনু বক্স ওপেন হবে সেখানে ক্লিক করুন ‘Manage’। এবার ‘Computer Management’ উইনডো ওপেন হবে, সেখানে বাঁ দিকের প্যানেলে রাইট ক্লিক করুন ‘Disk Management’ অপশনের উপর। এবার যে মেনু বক্স ওপেন হবে সেখানে ‘Change Drive Letters and Paths’ ক্লিক করুন। এবার ‘ড্রাইভ লেটার’ লিস্ট শো করবে। সেই লিস্ট থেকে কোনো একটি নতুন লেটার (অবশ্যই ‘C’, ‘D’ এবং ‘E’ এবং ‘J’ বাদে) সিলেক্ট করুন এবং OK বাটন ক্লিক করুন। এবার দেখুন পেনড্রাইভটিকে কম্পিউটার ‘রিকগনাইজ’ করতে পারছে কিনা। 

⇒ কমান্ড প্রম্পট

যদি উপরের পদ্ধতিতে কাজ না হয়, তবে করাপ্ট পেনড্রাইভের ফাইলগুলি অ্যাকসেস করার জন্য cmd-র সাহায্য নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে পেনড্রাইভটিকে প্রথমে কম্পিউটারের পোর্টে ইনসার্ট করুন। এবার Windows এবং R কী একসঙ্গে প্রেস করলে কমান্ড প্রম্পট উইনডো ওপেন হবে। কম্পিউটারের সার্চ বক্সে গিয়ে শুধু cmd টাইপ করে এন্টার প্রেস করলেও কমান্ড প্রম্পট উইনডো ওপেন হবে। এবার ধরা যাক আপনার পেনড্রাইভের ‘ড্রাইভ লেটার’ হল J। সেক্ষেত্রে কমান্ড প্রম্পটে লিখুন Chkdsk J: /f এবার কম্পিউটার পেনড্রাইভের ফাইলগুলিকে স্ক্যান করতে শুরু করবে। স্ক্যান শেষ হলে করাপ্ট ফাইলগুলিকে রিকভার করে কম্পিউটার Lost.dir – এর মধ্যে সেভ করবে। এই ডাইরেক্টরি ওপেন করার জন্য ‘মাই কম্পিউটার’ বা ‘কম্পিউটার’ আইকন ক্লিক করুন এবং উইনডোর ডানদিকে উপরে যে সার্চ বক্স রয়েছে সেখানে . (ডট) টাইপ করুন। এবার যে ফাইল ও ফোল্ডার লিস্ট ডেস্কটপে শো করবে, সেখান থেকে Lost.dir ফোন্ডারটি খুঁজে নিন। 

⇒ ফ্রি সফট্ওয়্যার 

এছাড়া বেশকিছু ফ্রি সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলির সাহায্যে অনেক ক্ষেত্রে করাপ্ট পেন ড্রাইভ থেকে ফাইল রিকভার করা সম্ভব। পেন ড্রাইভ বা মেমরি কার্ড থেকে ডিলিট হয়ে যাওয়া ফাইলও এই সফট্ওয়্যারের সাহায্যে রিকভার করা সম্ভব। তবে এসব ক্ষেত্রে ফ্রি সফট্ওয়্যারের তুলনায় পেইড সফট্ওয়্যারগুলি অনেক ভালো কাজ করে। ফ্রি সফট্ওয়্যারগুলির মধ্যে যেগুলি বেশি জনপ্রিয় সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল EaseUS Data Recovery এবং Recuva (যদিও এই দুটি সফট্ওয়্যারের পেইড ভার্সনও রয়েছে যেগুলি আরও বেশি কার্যকরী)। এই সফট্ওয়্যার দুটির ডাউনলোড লিংক টেকনোবিটসের ফেসবুক পেজে পাবেন। EaseUS Data Recovery বা Recuva প্রথমে কম্পিউটারে ইনস্টল করুন। এবার পেনড্রাইভটিকে কম্পিউটারে ইনসার্ট করুন। EaseUS Data Recovery বা Recuva আইকনের উপর ক্লিক করে অ্যাপটি ওপেন করুন এবং সেখানে পেনড্রাইভ থেকে কোন ধরনের ফাইলগুলি (পিকচার, ডকুমেন্ট ইত্যাদি) রিকভার করবেন সেই অপশন সিলেক্ট করুন এবং স্ক্রিনে দেওয়া প্রয়োজনীয় নির্দেশ মেনে ফাইলগুলি রিকভার করুন।

⇒ ওয়েবসাইটে যান 

তবে পেনড্রাইভ যদি করাপ্ট হয়ে যায়, তাহলে উপরের এই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করার আগে পেনড্রাইভটি যে কোম্পানির সেই কোম্পানির ওয়েবসাইটে যান। অনেক ক্ষেত্রে পেনড্রাইভ কোম্পানির ওয়েবসাইটে সেই কোম্পানির করাপ্ট পেনড্রাইভ ঠিক করার রিকভারি টুল থাকে। সেখান থেকে টুলটি ডাউনলোড করে কম্পিউটারে ইনস্টল করে নিয়ে তার সাহায্যেও করাপ্ট পেনড্রাইভকে ঠিক করা সম্ভব।

No comments:

Post a Comment

জনপ্রিয় পোস্ট