ওয়েব দুনিয়ায় এখন যে ইন্টারনেট ব্রাউজারটি নিয়ে জোর আলোচনা চলছে,
ফায়ারফক্স কোয়ান্টাম ব্রাউজারের স্পিড কেন
অন্যান্য ব্রাউজারের তুলনায় বেশি?
এর কারণ হলো এই ব্রাউজারের বিশেষ উন্নত ইঞ্জিন, যা কম্পিউটার, ট্যাব এবং
মোবাইল ফোনের সিপিউ-র একাধিক কোর ব্যবহার করে কাজ করে| গত কয়েক বছর ধরে মোজিলা
ফাউন্ডেশন তাদের ফায়ারফক্স ব্রাউজারের স্পিড এবং সিকিউরিটি বাড়ানোর কাজ করছিল| যে
প্রোজেক্টের অধীনে এই কাজ চলছিল, তার নাম প্রোজেক্ট ইলেক্ট্রোলিসিস| কিন্তু এই
প্রোজেক্টের কাজ করার সময় মোজিলার ইন্জিনিয়াররা একটি বিষয় বুঝতে পারেন যে, ফায়ারফক্স
ব্রাউজারের ইঞ্জিনের যা টেকনোলজি তাতে যতই চেষ্টা করা হোক না কেন, ব্রাউজারের স্পিড একটি নির্দিষ্ট সীমার পর আর বাড়ানো
সম্ভব নয়| কারণ ফায়ারফক্স ব্রাউজার যখন প্রথম তৈরী করা হয়েছিল (২০০২ সালের ২৩
সেপ্টেম্বর), তখন কম্পিউটারে সাধারণত সিঙ্গল কোর সিপিইউ (সেন্ট্রাল প্রসেসিং
ইউনিট) থাকত| কিন্তু গত প্রায় দুই দশকে কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোনের হার্ডওয়্যার
টেকনোলজির প্রভূত উন্নতি হয়েছে| তাই, এখন কম্পিউটারের কথা তো ছেড়েই দিন, সাধারণ মোবাইল ফোনেও হেক্সা কোর বা অক্টা কোর প্রসেসর থাকে| মোজিলার ইন্জিনিয়াররা বুঝতে পারলেন, যদি ব্রাউজারের
স্পিড যথেষ্ট বাড়াতে হয়, তবে উন্নত হার্ডওয়্যারের সাহায্য নিতে হবে, অর্থাৎ এখনকার
কম্পিউটার বা ফোনের মাল্টি কোর সিপিইউ-র সাহায্য নিতে হবে| কিন্তু প্রচলিত ফায়ারফক্স
ব্রাউজারের ইঞ্জিনের যা টেকনোলজি তা দিয়ে সিপিইউ-র মাল্টি কোর ব্যবহার করা যাবে
না| সেক্ষেত্রে ব্রাউজারের জন্য নতুন টেকনোলজির ইঞ্জিন তৈরী করতে হবে| এই চিন্তাভাবনা
থেকেই মোজিলা শুরু করলো প্রোজেক্ট কোয়ান্টাম| এই প্রোজেক্টের অধীনে তারা এক নতুন ব্রাউজার তৈরী করলো, যার ইঞ্জিন আধুনিক কম্পিউটার বা মোবাইল
ফোনের মাল্টি কোর প্রসেসরের সাহায্য নিয়ে দুরন্ত গতিতে কাজ করতে সক্ষম| মোজিলা
তাদের এই নতুন ব্রাউজারের নাম দিল ফায়ারফক্স কোয়ান্টাম|
ফায়ারফক্স-এর এই নতুন ব্রাউজারের আরো বৈশিষ্ট।
এই ব্রাউজারের ইঞ্জিন কাজ করার ক্ষেত্রে গুগল
ক্রোম ব্রাউজারের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম RAM ব্যবহার করে| তাই এই ব্রাউজারে কাজ করার পাশাপাশি কম্পিউটার বা ফোনে কোনো অ্যাপ ওপেন করে কাজ করলেও
কম্পিউটার বা ফোন স্লো হবে না| ফায়ারফক্স কোয়ান্টাম ব্রাউজার গুগল ক্রোম ব্রাউজারের তুলনায় কতটা দ্রুত কাজ করে? টেস্ট
রিপোর্ট অনুসারে ফায়ারফক্স কোয়ান্টাম ব্রাউজার যেখানে ৬৬ পয়েন্ট পেয়েছে, সেখানে
গুগল ক্রোম ব্রাউজার (ভার্সন নম্বর ৬১) পেয়েছে ৫১ পয়েন্ট|
ফায়ারফক্স কোয়ান্টাম ব্রাউজার যে শুধু দ্রুত কাজ করে, তাই-ই নয়, এটির ইউজার ইন্টারফেস
তৈরীর ক্ষেত্রেও যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে| কোয়ান্টাম ব্রাউজারের এই
নতুন ইউজার ইন্টারফেসের নাম ফোটন| ফোটনের গ্রাফিক ডিটেল এবং লেআউট যথেষ্ট আধুনিক
এবং আকর্ষনীয়| নতুন ইউজার ইন্টারফেসে একাধিক নতুন বাটন অ্যাড করা হয়েছে, যেগুলির
মধ্যে অন্যতম লাইব্রেরি বাটন| লাইব্রেরি-র মধ্যে ব্রাউজারের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ
ফিচার যেমন, বুকমার্ক, হিস্ট্রি, স্ক্রিনশট, পকেট, ইত্যাদি পাওয়া যায়, ফলে ব্রাউজার
অপারেটিং করাটা অনেকটাই সহজ|
ফায়ারফক্স কোয়ান্টাম ব্রাউজারের বিটা ভার্সন লঞ্চড হয়েছে| টেকনোবিটসের
আগ্রহী পাঠকরা বিটা ভার্সনটি ডাউনলোড করে কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনে ব্যবহার করতে
পারবেন| ডাউনলোড লিংক টেকনোবিটসের ফেসবুক পেজে পাবেন| ফায়ারফক্স কোয়ান্টাম ব্রাউজার মোজিলা লঞ্চ করবে আগামী ১৪ নভেম্বর|
No comments:
Post a Comment