Image Credit: Pixabay |
আমেরিকার এক কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা টারানা বুর্ক প্রথম ধর্ষিত হন মাত্র ছয় বছর বয়সে।পরবর্তীতে একাধিকবার তিনি ধর্ষণ ও যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন। টারানা বুর্ক তাঁর নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছিলেন, আমেরিকার মতো দেশেও ধর্ষিত হওয়ার পরেও অনেক মহিলা বিষয়টি চেপে যান, পুলিশে অভিযোগ জানান না বা বিষয়টি নিয়ে সরব হন না। ধর্ষিত মহিলারা যাতে বিষয়টি চেপে না গিয়ে প্রতিবাদে সরব হন, সেজন্য বুর্ক আন্দোলন শুরু করেন।
টেকনোবিটসের ব্লগ এখন ফেসবুক ছাড়াও পাবেন টুইটার, টেলিগ্রাম ও ইনস্টাগ্রামে ।
Me Too
২০০৬ সালে টারানা বুর্ক Me Too আন্দোলন শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের অক্টোবরে হলিউডের অভিনেত্রী আলেয়সা মিলানো নিজের যৌন হেনস্থার অভিজ্ঞতা জানিয়ে টুইটারে একটি টুইট করেন। সেই টুইটে তিনি হ্যাশট্যাগ দিয়েছিলেন Me Too। অ্যালেয়সার সেই টুইট রাতারাতি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে যায় এবং দেশ, বিদেশের অনেক মহিলাই নিজেদের যৌন হেনস্থার অভিজ্ঞতা জানিয়ে সোশাল নেটওয়ার্কে সরব হন। তাঁরা প্রত্যেকেই তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার সময় অ্যালেয়সার সেই হ্যাশট্যাগটি সঙ্গে জুড়ে দেন। এইভাবে Me Too আন্দোলন গত এক বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে গেছে।
ভারতে শুরু হল আন্দোলন
ভারতেও Me Too আন্দোলনে অংশ নিয়ে অনেক মহিলা নিজেদের যৌন হেনস্থা নিয়ে সরব হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে রয়েছে তনুশ্রী দত্ত, কঙ্গনা রানাওয়াত সহ অনেক বলিউড অভিনেত্রী। কয়েক দিন আগে এক মহিলা Me Too আন্দোলনে অংশ নিয়ে লেখক চেতন ভগতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। ওই মহিলার অভিযোগ, চেতন তাকে হোয়াটসঅ্যাপে অশ্লীল মেসেজ পাঠাতেন। প্রমাণ হিসেবে তিনি হোয়াটসঅ্যাপের সেই চ্যাট হিস্ট্রিও সবাইকে দেখিয়েছেন। বিষয়টি চেতন স্বীকার করে নিয়ে ক্ষমাও চেয়েছেন।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট হিস্ট্রি
ওই মহিলার অভিযোগ চেতন স্বীকার করে নেওয়ায় এটা স্পষ্ট যে, মহিলা মিথ্যা অভিযোগ করেননি। অর্থাৎ তিনি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের যে স্ক্রিন শট প্রমাণ হিসেবে দেখিয়েছেন, সেটা সত্যি। আমি সেই বিষয়টি নিয়ে কিছু বলছি না। কিন্তু টেকনোবিটসের পাঠকদের একটা বিষয় জানাতে চাই যে, খুব সহজেই কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপের ফেক অর্থাৎ নকল চ্যাট হিস্ট্রি তৈরি করা সম্ভব।
নকল চ্যাট হিস্ট্রি
এমন একাধিক অ্যাপ ও ওয়েবসাইট রয়েছে যার সাহায্যে আপনারা সহজেই হোয়াটসঅ্যাপের ফেক চ্যাট হিস্ট্রি তৈরি করতে পারেন। আর তার সুযোগ নিয়ে কারও বিরুদ্ধে কিন্তু ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা সম্ভব। নকল চ্যাট হিস্ট্রি তৈরি করে কারও বিরুদ্ধে এভাবে অভিযোগ আনা অবশ্যই সাইবার ক্রাইমের আওতায় পড়ে। বিষয়টি যে বিভিন্ন দেশের সরকার এবং গুগল বা অ্যাপল জানে না, তা নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও গুগলের প্লে স্টোরে কিংবা অ্যাপলের অ্যাপস্টোরে এমন একাধিক অ্যাপ রয়েছে কিংবা ইন্টারনেটে এমন একাধিক ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলির সাহায্যে খুব সহজেই নকল হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট হিস্ট্রি তৈরি করা সম্ভব।
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ
গুগলের প্লে স্টোরে যে সমস্ত অ্যাপের সাহায্যে ফেক চ্যাট হিস্ট্রি তৈরি করা সম্ভব সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল Yazzy অ্যাপ। এই অ্যাপটির সাহায্যে যেমন ফেক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চ্যাট তৈরি করা সম্ভব, তেমনি ফেক ফেসবুক চ্যাট হিস্ট্রি তৈরি করাও সম্ভব। তা ছাড়া এই অ্যাপের সাহায্যে ফেক ফেসবুক পোস্ট তৈরি করে তাতে ফেক ‘লাইক’ ও ফেক ‘কমেন্ট’ অ্যাড করাও সম্ভব।
প্লে স্টোরে আরও একটি এই ধরনের অ্যাপ রয়েছে, যার নাম WhatsFake Pretend Fake Chats। এই অ্যাপের সাহায্যেও নকল হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ও চ্যাট হিস্ট্রি তৈরি করা সম্ভব।
প্লে স্টোরে Prank-fake conversations নামে আর একটি অ্যাপ রয়েছে, যার সাহায্যে সহজে হোয়াটসঅ্যাপের নকল চ্যাট হিস্ট্রি তৈরি করা সম্ভব।
Create Whats Fake Chat নামে আরও একটি উল্লেখযোগ্য অ্যাপ রয়েছে যার সাহায্যেও নকল হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ও চ্যাট হিস্ট্রি, নকল ইউজার নেম, নকল স্ট্যাটাস ইত্যাদি তৈরি করা সম্ভব।
ওয়েবসাইট
কম্পিউটারেও বিশেষ একটি সাইটের সাহায্যে ফেক হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট হিস্ট্রি তৈরি করা সম্ভব।
Credit: Fakewhats |
এই সাইটটির নাম Fakewhats। এই সাইটটির ইন্টারফেস খুবই ইউজার ফ্রেন্ডলি। এই সাইটের সাহায্যে খুব সহজেই নকল হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট হিস্ট্রি তৈরি করার পাশাপাশি চ্যাট উইনডোতে ফোনের ফেক ব্যাটারি স্ট্যাটাস, নেটওয়ার্ক নেম ইত্যাদি সব কিছুই তৈরি করা সম্ভব। ফলে যে চ্যাট হিস্ট্রি আপনি তৈরি করবেন সেটা একেবারে আসল বলে মনে হবে। আমি এই সাইটের সাহায্যে একটি ফেক চ্যাট হিস্ট্রি তৈরি করেছি (এই লেখার পাশের ছবিটা দেখুন)।
iOS অ্যাপ
আইফোন ও আইপ্যাডেও বিভিন্ন অ্যাপের সাহায্যে এভাবে সহজেই ফেক হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট হিস্ট্রি তৈরি করা সম্ভব। অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে এই অ্যাপগুলি আপনি সহজেই পেয়ে যাবেন। তবে সেগুলির মধ্যে কয়েকটি কিন্তু পেইড অ্যাপ।
ফেক চ্যাট হিস্ট্রি তৈরি করার জন্য উল্লেখযোগ্য iOS অ্যাপগুলি হল WhatsFake এবং WhatsPrank।
No comments:
Post a Comment