22 Jul 2018

SD কার্ড কেনার আগে এই বিষয়গুলি আপনাকে জানতেই হবে


আমরা অনেকেই SD কার্ড ব্যবহার করি
 কিন্তু তার
Image Credit: Pexels
প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত বিষয়গুলি
পুরোপুরি জানি না। কিন্তু SD কার্ড
কেনার আগে সেই বিষয়গুলি জেনে
নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। না হলে
পরবর্তীতে সমস্যায় পড়তে পারেন।



টেকনোবিটসের ব্লগ এখন ফেসবুক ছাড়াও পাবেন  টুইটার,  টেলিগ্রাম  ও  ইনস্টাগ্রামে  


SD কার্ডের রাইটিং স্পিড

SD কার্ডের রাইটিং স্পিডের পাঁচটি ক্লাস রয়েছে। সেগুলি হল যথাক্রমে Class2, Class4, Class6, Class8 এবং Class10। রাইটিং স্পিড হল, যে স্পিডে আপনি SD কার্ডে ডেটা রাইট করতে পারবেন অর্থাৎ স্টোর করতে পারবেন। যেমন ধরুন, আপনি কোনও ফাইল ডাউনলোড করেছে বা ভিডিয়ো শুট করেছেন, সেক্ষেত্রে ডাউনলোড হওয়া ফাইলটি বা ভিডিয়োটি যে স্পিডে আপনার ফোনের বা ক্যামেরার SD কার্ডে স্টোর হবে অর্থাৎ যে স্পিডে আপনি সেই ফাইলটিকে ফোনের ইন্টারনাল মেমরি থেকে SD কার্ডে ট্রান্সফার করতে পারবেন, সেটাই হল কার্ডের রাইটিং স্পিড। এই স্পিড সাধারণত কার্ডের উপর ‘C’ অক্ষরের মধ্যে লেখা থাকে।


Class2 কার্ডের মিনিমাম রাইটিং স্পিড ২ MBps অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে এই কার্ডে আপনি ২ MB ডেটা রাইট করতে বা স্টোর করতে পারবেন। Class4, Class6, Class10 – এর ক্ষেত্রে এই রাইটিং স্পিড যথাক্রমে ৪, ৬ ও ১০ MBps। কিন্তু মনে রাখবেন এটি হল মিনিমাম স্পিড। তার মানে একটি Class4 SD কার্ডের মিনিমাম রাইটিং স্পিড ৪ MBps হলেও পরিস্থিতি বিশেষে সেটির ম্যাক্সিমাম বা সর্বোচ্চ রাইটিং স্পিড কিন্তু ৫ বা ৬ MBps হতেও পারে। এই বিষয়টি সম্পর্কে অনেকের স্পষ্ট ধারণা না থাকায় তাঁরা SD কার্ড কিনতে গিয়ে ভুল করেন। যেমন ধরুন, আমি স্যানডিস্ক কোম্পানির একটি Class2 SD কার্ড কিনলাম। আর আপনি তেমন নামি ব্র্যান্ড নয় এমন কোম্পানির একটি Class4 SD কার্ড কিনলেন। আপনি ভাবলেন আপনার কার্ডের ক্লাস বেশি অর্থাৎ সেটি আমার কার্ডের তুলনায় উপরের ভার্সনের, তাই আপনি বেশি রাইটিং স্পিড পাবেন। কিন্তু আপনার এই ধারণা ভুল হতেই পারে। তার কারণ স্যানডিস্কের Class2 কার্ডের মিনিমাম রাইটিং স্পিড ২ MBps হলেও সেটির সর্বোচ্চ স্পিড হয়তো ৫ MBps। অন্যদিকে, আপনার কার্ডের মিনিমাম স্পিড ৪ MBps এবং সর্বোচ্চ স্পিড হয়তো ৪.২ MBps। অর্থাৎ আপনি আমার থেকে উপরের ক্লাসের কার্ড কিনলেও বাস্তবে ম্যাক্সিমাম স্পিড কম পাচ্ছেন। তাই SD কার্ড কেনার সময় ক্লাস দেখার পাশাপাশি ব্র্যান্ডটিও অর্থাৎ সেটি কোন কোম্পানির তৈরি সেটিও দেখে নেওয়া জরুরি। মনে রাখবেন নামি ব্র্যান্ডের নিচু ক্লাসের SD কেনা অনেক ক্ষেত্রেই কোনও সাধারণ ব্র্যান্ডের উঁচু ক্লাসের কার্ড কেনার থেকে লাভজনক।

আলট্রা হাই স্পিড

SD কার্ডের আরও একটি ক্লাস রয়েছে সেটি হল UHS (Ultra High Speed) ক্লাস। এই ক্লাসের দুটি ক্যাটেগরি রয়েছে। সেগুলি হল UHS I বা U1 এবং UHS ℿ বা U3। U1 কার্ডের মিনিমাম রাইটিং স্পিড ১০ MBps যা Class 10 SD কার্ডের সমান। U3 কার্ডের মিনিমাম স্পিড ৩০ MBps।

স্লট দেখে নিন

সব ফোনে বা ক্যামেরায় কিন্তু U1 বা U3 কার্ড কাজ করবে না। শুধুমাত্র যে সমস্ত ফোন বা
Image Credit: Laser
ক্যামেরায় UHS, SDHC বা SDXC স্লট রয়েছে, সেই সমস্ত ডিভাইসে এই কার্ড কাজ করবে। এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পাঠকদের বলি। ধরা যাক আপনার ফোনে বা ক্যামেরায় UHS, SDHC বা SDXC স্লট রয়েছে। অতএব আপনি একটি U1 বা U3 কার্ড কিনলেন। কিন্তু তবু আপনি সেই কার্ডের সর্বোচ্চ রাইটিং স্পিড নাও পেতে পারেন। কারণ UHS কার্ডে সর্বোচ্চ স্পিড পেতে গেলে শুধু সাপোর্টিং স্লট থাকলেই চলবে না, একই সঙ্গে আপনার ফোন বা ক্যামেরায় হাইস্পিড ডেটা ট্রান্সফারের জন্য অত্যাধুনিক BUS ইন্টারফেস টেকনোলজি থাকা প্রয়োজন। অর্থাৎ যদি আপনার ফোন বা ক্যামেরায় UHS, SDHC বা SDXC স্লট থাকে এবং সেই সঙ্গে হাইস্পিড BUS ইন্টারফেস টেকনোলজি থাকে, একমাত্র তবেই আপনার U1 বা U3 কার্ড ব্যবহার করা উচিত।

রাইটিং স্পিড X

কোনও কোনও ক্ষেত্রে SD কার্ডের রাইটিং স্পিড ‘X’ দিয়েও চিহ্নিত করা হয়। প্রথম যখন কম্পিউটারে CD ড্রাইভের সাহায্যে CD-তে ডেটা রাইটিং শুরু হল, তখন CD-র রাইটিং স্পিড ছিল ১৫০ KBps। অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে CD-তে ১৫০ কিলোবাইট ডেটা রাইট করা যেত। CD-র এই রাইটিং স্পিডকে ‘X’ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। কোনও CD ড্রাইভের স্পিড 4X মানে সেটি সেকেন্ডে ১৫০x৪ = ৬০০ কিলোবাইট ডেটা রাইট করতে পারে। CD ড্রাইভের রাইটিং স্পিড তাই 2X, 4X, 10X, 16X এইভাবে মাপা হয়।

কোনও কোনও ক্ষেত্রে SD কার্ডের স্পিডও এভাবে ‘X’ দিয়ে মাপা হয়। কোনও SD কার্ডের উপর যদি লেখা থাকে 100X, তাহলে তার স্পিড হল ১০০x১৫০ = ১৫০০০ KBps বা ১৫ MBps।

কোন কার্ড কিনবেন

SD কার্ড কেনার আগে ভাবুন আপনি কেন কার্ডটি কিনবেন। যদি আপনার মূল উদ্দেশ্য হয় ফোনের এক্সটারনাল মেমরি স্পেস বাড়ানো, তবে কোনও নামি ব্র্যান্ডের Class2 বা Class4 স্পিডের কার্ড কিনুন।

কিন্তু ধরা যাক আপনি আপনার ফোন বা ক্যামেরার সাহায্যে হাই রেজলিউশনের 4K ভিডিয়ো শুট করেন। সেক্ষেত্রে আপনার ফোন বা ক্যামেরার এক্সটারনাল মেমরি স্পেস বাড়ানোর পাশাপাশি হাই স্পিড ডেটা ট্রান্সফারেরও প্রয়োজন। সেজন্য আপনাকে কিনতে হবে হয় Class10 বা U1 কিংবা U3 স্ট্যান্ডার্ডের SD কার্ড।

আসল, না নকল চিনবেন কী করে

বাজারে এখন বিভিন্ন নামি ব্র্যান্ডের ছাপ মারা নকল SD কার্ড প্রচুর বিক্রি হয়। কিছুদিন আগে স্যানডিস্ক কোম্পানি জানিয়েছিল, বাজারে স্যানডিস্ক কোম্পানির ছাপ মারা যে SD কার্ডগুলি বিক্রি হয় সেগুলির প্রতি তিনটির মধ্যে একটি নকল। শুধু স্যানডিস্ক নয়, অন্যান্য নামি ব্র্যান্ডেরও প্রচুর নকল SD কার্ড বাজারে বিক্রি হয়।


SD কার্ড আসল না নকল তা জানার জন্য গুগল প্লে স্টোরে একটি অ্যাপ রয়েছে যার নাম এসডি ইনসাইট। এই অ্যাপটি ফোনে ইনস্টল করুন। তারপর আপনার SD কার্ডটিকে ফোনে ইনসার্ট করে সেই অ্যাপের সাহায্যে চেক করুন কার্ডটি আসল, না নকল। এছাড়া একটি বিশেষ ওয়েবসাইট রয়েছে যেখান থেকেও আপনি একটি অ্যাপ ডাউনলোড করে সেটি আপনার কম্পিউটার বা ফোনে ইনস্টল করে তার সাহায্যে SD কার্ডটি পরীক্ষা করতে পারবেন। প্লে স্টোরের অ্যাপটির এবং সেই ওয়েবসাইটের লিঙ্ক টেকনোবিটসের ফেসবুক পেজের একেবারে উপরে ডাউনলোড নোটে পাবেন। ডাউনলোড নোটটি ট্যাপ বা ক্লিক করুন। তার ভেতরে রয়েছে টেকনোবিটসের গুগল শিটের লিঙ্ক। তাতে ক্লিক করলেই আপনি এসডি ইনসাইট বা সেই ওয়েবসাটটের লিঙ্ক পেয়ে যাবেন।


আগামী ব্লগে জানাব, SD কার্ড করাপ্ট হলে কীভাবে সেটি রিকভার করবেন।


টেকনোবিটসের এই ব্লগটি পড়ে যদি ভালো লাগে তবে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ার করুন। কমেন্ট করুন ব্লগের নীচে বা টেকনোবিটসের ফেসবুক পেজে।


টেকনোবিটসের ব্লগগুলি যদি নিজের ফেসবুক নিউজ ফিডে পেতে চান, তবে টেকনোবিটসের ফেসবুক পেজে গিয়ে Follow বাটন ক্লিক করে তারপর See first অপশনটিতে ক্লিক করুন। ইমেল সাবস্ক্রিপশনের  জন্য টেকনোবিটসের ব্লগ সাইটে নিজের ইমেল আইডি সাবমিট করে রেজিস্ট্রেশন করুন।




No comments:

Post a Comment

জনপ্রিয় পোস্ট