24 Mar 2018

ফেসবুক থেকে তথ্য চুরি ও সাইকোগ্রাফিক টেকনিক

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা এখন একটি পরিচিত নাম। গত এক সপ্তাহে বিশ্বের প্রায় সব দেশের ঘরে ঘরে এই নামটি পৌঁছে গিয়েছে। এই সংস্থাকে নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে ইন্টারনেটের দুনিয়ায় হইচই পড়ে গিয়েছে।
Photo courtesy: Pixabay
হইচইয়ের কারণটা কী? আমেরিকায় গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ভোটের ফল প্রভাবিত করতে নাকি ফেসবুক থেকে তথ্য চুরি করা হয়েছিল। আর এই তথ্য চুরির পেছনে ছিল কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামে ব্রিটেনের ওই সংস্থা। তথ্য চুরির পুরো বিষয়টাই নাকি ফেসবুক জানতো, কিন্তু অভিযোগ, তারা বিষয়টা চেপে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল।
কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা সংস্থাটি সম্পর্কে ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রচুর আলোচনা হয়েছে। তাই সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় যাব না। তবে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার পাশাপাশি আরও একটি শব্দবন্ধ গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন সংবাদপত্রে নিশ্চয় অনেকের চোখে পড়েছে, যদিও কোনও সংবাদপত্রেই সেই সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু লেখা হয়নি (যদিও লেখা উচিত ছিল, কারণ ফেসবুক থেকে তথ্য চুরির ঘটনায় এই শব্দবন্ধটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ)। সেই শব্দবন্ধটি হল সাইকোগ্রাফিক টেকনিক (Psychographic Technique)। সাইকোগ্রাফিক টেকনিক আসলে কী, ফেসবুক থেকে তথ্য চুরির ঘটনার সঙ্গে এর যোগসূত্র কী, এই টেকনিক ভোটের ফল প্রভাবিত করার ক্ষেত্রেই বা কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, সেই বিষয়ে টেকনোবিটসের এই ব্লগে বিস্তারিত আলোচনা করবো। 


২০১৬ সালে আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের (যে নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জিতেছেন) আগে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা সংস্থাটির নাম খুব বেশি লোক জানত না। এটি একটি কনসাল্টিং কোম্পানি যারা নির্বাচনি বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত কাজকর্ম করে। অর্থাৎ নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দল ভোটারদের কাছে কী কী বিষয় তুলে ধরবে, কী কী প্রতিশ্রুতি দেবে, রাজনৈতিক দলটির নির্বাচনী স্লোগান কী, প্রার্থী নির্বাচনী ভাষণে কী কী বলবেন ইত্যাদি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে সাহায্য করে এই সংস্থা এবং তার বিনিময়ে রাজনৈতিক দলগুলির কাছ থেকে মোটা টাকা ফি নেয়।
Photo Courtesy: Pixabay

২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর আমেরিকায় কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা সংস্থার কাজকর্ম নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে যে, সংস্থাটি নাকি নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জিততে অনৈতিকভাবে সাহায্য করেছে। কিন্তু ঠিক কোন অনৈতিক পদ্ধতিতে সংস্থাটি রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সাহায্য করেছে, সেই ব্যাপারে এতদিন কোনও প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু পর্দা ফাঁস হল দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং দ্য অবজার্ভার অফ লন্ডন সংবাদপত্রের সাংবাদিকদের স্টিং অপারেশনে। সম্প্রতি গোপন ক্যামেরার মাধ্যমে স্টিং অপারেশন চালিয়েছিলেন ওই দুই পত্রিকার সাংবাদিকরা। সেই গোপন ক্যামেরার সামনে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা সংস্থার সাসপেন্ড হওয়া সিইও আলেকজান্ডার নিক্স (স্টিং অপারেশন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা আলেকজান্ডারকে সাসপেন্ড করেছে) বেশ গর্বের সঙ্গে জানিয়েছেন যে, তাঁরা ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জিততে সাহায্য করার জন্য সাইকোগ্রাফিক টেকনিক ব্যবহার করেছিলেন এবং তার জন্য তারা আমেরিকার ৫০ মিলিয়ন অর্থাৎ ৫ কোটি ফেসবুক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে তথ্য চুরি করেছিলেন। সেই চুরি করা তথ্য এখনও কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সার্ভারে স্টোর করা আছে। গোপন ক্যামেরার সামনে আরও একটি ভয়ংকর তথ্য নিক্স জানিয়েছেন, সেটা হল এই যে, তথ্য চুরির গোটা বিষয়টি নাকি ফেসবুক কোম্পানি জানতো।

আলেকজান্ডার নিক্স-এর এই বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর হইচই পড়ে গিয়েছে। মার্ক জুকারবার্গ প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন। হোয়াটস্অ্যাপ কোম্পানির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ব্রায়ান অ্যাকটন টুইট করে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট গ্রাহকদের কাছে আবেদন করেছন যেন তাঁরা তাঁদের অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে ব্রিটেনে সরকারি তরফে তদন্ত শুরু হয়েছে। আমেরিকার ফেডেরাল ট্রেড কমিশনও (যে সংস্থার কাছে আমেরিকার কোম্পানিগুলিকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হয় যে, তারা গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষিত রাখবে) বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে। সব মিলিয়ে বিশ্বজুড়ে ফেসবুকের ভাবমূর্তি যে যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।


প্রথমে জেনে নেওয়া যাক কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কীভাবে ফেসবুক থেকে তথ্য চুরি করেছিল এবং সাইকোগ্রাফিক টেকনিট বিষয়টি আসলে ঠিক কী।


বেশ কয়েক বছর আগে সাইকোগ্রাফিক টেকনিক নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন সাইবার বিশেষজ্ঞ মিশেল কোসিনস্কি (Michal Kosinski)। মিশেল তাঁর গবেষণা রিপোর্টে একটি চমকে দেওয়ার মতো তথ্য জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, একজন ফেসবুক গ্রাহক কোন কোন ফেসবুক পেজ লাইক করেছে বা কোন কোন পোস্ট লাইক করেছে — সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে সেই ব্যক্তির সম্পর্কে অনেক কিছু সঠিক ভাবে বলে দেওয়া সম্ভব। মিশেল তাঁর গবেষণা রিপোর্টে দাবি করেন ফেসবুক লাইক থেকে কোনও ব্যক্তির গায়ের রং কী (সাদা, কালো, বাদামি না পীত) সেটা ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে সঠিকভাবে বলে দেওয়া সম্ভব। শুধু তাই নয়, ওই ব্যক্তির যৌনজীবন (অর্থাৎ সে সমকামী, উভকামী নাকি সাধারণ)৮৮ শতাংশ ক্ষেত্রে সঠিক ভাবে বলে দেওয়া সম্ভব। সেই ব্যক্তির বিশেষ কোনও রাজনৈতিক দল বা মতাদর্শের প্রতি প্রকট বা প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে কি না, সেটা ৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রে সঠিকভাবে বলে দেওয়া সম্ভব। এছাড়া সেই ব্যক্তির সম্পর্কে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এভাবে জানা সম্ভব

মিশেল তাঁর গবেষণার জন্য একটি ফেসবুক অ্যাপ তৈরি করেছিলেন। কোনও ফেসবুক গ্রাহক যদি সেই অ্যাপে লগইন করতেন সেক্ষেত্রে অ্যাপটি সেই গ্রাহকের ফেসবুক লাইক সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য কপি করে নিত। সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করে মিশেল তার গবেষণা রিপোর্টটি তৈরি করেছিলেন। মিশেলের এই গবেষণা রিপোর্ট কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার নজরে আসে। মিশেল তাঁর অ্যাপের মাধ্যমে ফেসবুক গ্রাহকদের যে তথ্যগুলি সংগ্রহ করেছিলেন, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা মিশেলের কাছ থেকে সেই তথ্যগুলি চায় এবং তার জন্য তারা মিশেলকে কয়েক কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু মিশেল সেই প্রস্তাবে সাড়া দেননি।

কিন্তু সবাই মিশেলের মতো সৎ নন। এমনই একজন হলেন আলেকজান্ডার কোগান। তিনি একজন শিক্ষাবিদ। আদতে রাশিয়ায় জন্ম
Photo Courtesy: Pixabay
হলেও বর্তমানে আমেরিকার নাগরিক। ফেসবুক গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার জন্য কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কোগানকে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কোগান রাজি হন। তিনি তথ্য চুরির জন্য প্রথমে মিশেলের অ্যাপের মতো একটি ফেসবুক অ্যাপ তৈরি করলেন। অ্যাপটির নাম
Thisisyourdigitallife। এটি একটি পার্সোনালিটি বেসড্ কুইজ অ্যাপ। অর্থাৎ ‘নিজেকে জানুন’ বা ‘নিজেকে চিনুন’ জাতীয় অ্যাপ। ফেসবুকে এমন অনেক অ্যাপ রয়েছে। এই অ্যাপগুলি আপনার কাছে কয়েকটি প্রশ্ন রাখবে, আপনি সেই প্রশ্নগুলির যেমন যেমন উত্তর দেবেন, তার ভিত্তিতে অ্যাপটি আপনি লোকটি কেমন (অর্থাৎ রোমান্টিক নাকি কাঠখোট্টা, ভাবুক নাকি বাস্তববাদী, আপনি গতজন্মে কী ছিলেন, আগামী জন্মে কী হবেন ইত্যাদি ইত্যাদি) সেটা জানাবে। এই ফেসবুক অ্যাপটি যখন কোনও গ্রাহক ব্যবহার করতেন, তখন অ্যাপটি গোপনে সেই গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে যাবতীয় তথ্য, (অর্থাৎ তাঁর জন্ম তারিখ, সে কোথাকার বাসিন্দা, তাঁর সমস্ত লাইক, পোস্ট শেয়ার ইত্যদি কপি করে কোগানকে পাঠিয়ে দিত)। 

কোগান একটি চালাকি করেছিলেন। তিনি অ্যাপটি এমনভাবে তৈরি করেছিলেন যে, যখন অ্যাপটি কোনও ফেসবুক গ্রাহক ব্যবহার করতেন তখন তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে তথ্য চুরি করার পাশাপাশি অ্যাপটি সেই গ্রাহকের সমস্ত ফেসবুক ফ্রেন্ডের অ্যাকাউন্ট থেকেও সমস্ত তথ্য চুরি করত (ফেসবুক গ্রাহকরা তাঁদের শেয়ার করা পোস্ট বা লাইক ‘অনলি ফ্রেন্ড’, ‘অনলি মি’ বা অন্য কোনও অপশনের মাধ্যমে হাইড করে রাখলেও এই অ্যাপ তা জেনে নিত)। কোগানের অ্যাপটি ব্যবহার করেছিলেন ২৭০০০০ জন। কিন্তু সেই ব্যবহারকারীরা এবং তাঁদের বন্ধুদের সংখ্যা মিলিয়ে কোগানের অ্যাপটি প্রায় ৫ কোটি ফেসবুক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে তথ্য চুরি করেছিল!

কোগান যে তাঁর অ্যাপের মাধ্যমে ফেসবুক গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে তথ্য চুরি করছেন, তা জানতো ফেসবুক। কিন্তু কোগান ফেসবুক কোম্পানিকে জানিয়েছিলেন, তিনি একজন শিক্ষাবিদ, তাই তাঁর গবেষণার কাজের জন্য তিনি তথ্য সংগ্রহ করছেন। ফেসবুক তখন কোগানকে বলেছিল গবেষণার কাজ হয়ে গেলে যেন সেই তথ্য ডিলিট করে দেওয়া হয়। কোগান তাতে সম্মত হয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে সেই তথ্য ডিলিট করা হয়নি (আলেকজান্ডার নিক্স গোপন ক্যামেরার সামনে তেমনটাই বলেছেন) এবং ফেসবুকও আর পরে বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামায়নি।

সাইকোগ্রাফিক টেকনিকের সাহায্যে কীভাবে ভোটের ফল প্রভাবিত করা সম্ভব?

মনোবিদরা বলেন, কোনও ব্যক্তিই পুরোপুরি নিরপেক্ষ নয়। যে কোনও বিশেষ মতবাদ, আদর্শ বা রাজনৈতিক দলের প্রতি তাঁর প্রকট বা প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে। ভোটের রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে বলা যেতে পারে যে, যাঁদের বিশেষ কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতি প্রকট সমর্থন রয়েছে, তাঁরা কোন দলে ভোট দেবেন বা তাঁদের ভোট কোনদিকে যাবে সেটা অনেকটাই নিশ্চিত অর্থাৎ জানা সহজ। কিন্তু সমস্যা হল তাঁদের নিয়ে যাঁদের বিশেষ কোনও দলের প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে। মনোবিদদের মতে, এই ধরনের লোকজন সাধারণত সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। অর্থাৎ বিশেষ কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন থাকলেও নিশ্চিত করে বলা যায় না যে, তাঁরা সেই দলকেই ভোট দেবেন। হয়তো বুথে গিয়ে তাঁরা শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পালটে অন্য দলকে ভোট দিয়ে বসলেন। এই ধরনের লোকজন বা ভোটারদের চিন্তাধারা প্রভাবিত করার জন্য সাইকোগ্রাফিক টেকনিক ব্যবহার করা হয়। প্রথমে সেই ভোটারদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দেখে নেওয়া হয় তাঁরা কোন কোন পেজ লাইক করেছেন। কোন কোন পেজের কোন কোন পোস্ট এবং বন্ধুদের কোন পোস্টগুলি লাইক করেছেন। কোন কোন পোস্ট শেয়ার করেছেন ইত্যাদি। তারপর সেই তথ্যের ভিত্তিতে সাইকোগ্রাফিক টেকনিকের সাহায্যে জেনে নেওয়া হয় সেই লোকগুলির মধ্যে কাদের কোন দলের প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে

ধরা যাক নির্বাচনে দুটি দল লড়ছে — A এবং B। A দলটি একটি নির্বাচনী কনসাল্টিং কোম্পানিকে টাকা দিয়েছে তাদের হয়ে কাজ করার জন্য। সেই কোম্পানি সাইকোগ্রাফিক টেকনিকের সাহায্যে ধরা যাক ৫ কোটি ফেসবুক গ্রাহকের তথ্য চুরি করে তা থেকে জেনে নিল ১.৫ কোটি লোকের A দলের প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে। এবার সেই কোম্পানি সেই ১.৫ কোটি গ্রাহকের ফেসবুক নিউজ ফিডে বা ইমেল অ্যাকাউন্টে নির্বাচনের আগে নিয়মিত ভাবে A দলের সমর্থনে এবং B দলের নানা কাজকর্মের সমালোচনা করে নানা পোস্ট ও মেল পাঠাবে।
Photo Courtesy: Pixabay
সাধারণত ওই সমস্ত পোস্টগুলিতে কৃত্রিমভাবে লাইকের সংখ্যাও অনেক বাড়ানো থাকে (ফেসবুকের পোস্টে কৃত্রিমভাবে লাইকের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য অনেক কোম্পানি রয়েছে। তাদের টাকা দিলে আপনার প্রতিটা পোস্ট হাজার হাজার লাইক পাবে)। এবার সেই ১
.৫ কোটি লোক যদি নিয়মিত A দলের সমর্থনমূলক এবং B দলের সমালোচনামূলক পোস্ট তাঁদের নিউজ ফিডে নিয়মিত দেখতে থাকে এবং সেই সঙ্গে যদি দেখে যে, সেই সমস্ত পোস্টের প্রতিটিতেই হাজার হাজার লাইক রয়েছে, তখন A দলের প্রতি তাঁদের প্রচ্ছন্ন সমর্থন প্রকট সমর্থনে বদলে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে। আমেরিকায় গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা রিপাবলিকান পার্টির জন্য ঠিক এই কাজটাই করেছিল।


এতটা পড়ার পর টেকনোবিটসের অনেক পাঠক নিশ্চয় ভাবছেন যে, তাঁরা তাঁদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেবেন?

তাহলে তাঁদের জন্য শেষে একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সেটা হল এই যে, আপনার মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারে ফেসবুক তাদের কুকিজ (ট্র্যাকিং ফাইল) সেভ করে রেখেছে। তাই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিলিট করলেও আপনি কোন ওয়েবসাইট ভিজিট করছেন, হোয়াটসঅ্যাপে কোন ভিডিয়ো দেখছেন, কী কী শেয়ার করছেন — সবই ফেসবুক জানতে পারবে। ফেসবুকের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার আপাতত কোনও উপায় নেই।

টেকনোবিটসের নতুন পোস্টগুলি যদি মিস করতে না চান, তবে টেকনোবিটসের ফেসবুক পেজে গিয়ে Following বাটনে ট্যাপ করার পর See first অপশনটিতে ট্যাপ করে অন করুন।




পোস্টটি ভালো লাগবে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ফেসবুকে বা ব্লগসাইটে কমেন্ট করতে ভুলবেন না।

No comments:

Post a Comment

জনপ্রিয় পোস্ট